টানা বর্ষণে ও মেঘনা নদীর জোয়ারে পানি জমে লক্ষ্মীপুরের সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয়দের সহযোগীতায় খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করছে প্রশাসন। এছাড়া পানিবন্দিদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি, কমলনগর, রায়পুর ও রামগঞ্জের সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে জেলায় ১৭ হাজার ৫০০ পুকুর-জলাশয় ভেসে গেছে, চাষিদের বিভিন্ন প্রকার ছোট বড় অন্তত ৩ হাজার মেট্রিক টন মাছ বের হয়ে গেছে। এতে করে ৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থা থাকলে তা বেড়ে দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন জানিয়েছেন, বন্যায় আমন ধানের বীজ তলা ১ হাজার ৪৮৬ হেক্টর, আমন ধান ২ হাজার ৬১৮ হেক্টর, আউশ ধান ২ হাজার ৯৬৩ হেক্টর ও শরৎকালীন ৪৪৩ হেক্টরের সবজি আক্রান্ত হয়েছে। পানি আরও বেড়ে ২ দিন থাকলে এসব নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষকদের জন্য বীজ সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ডিসি সুরাইয়া জাহান বলেন, জেলায় জলাবদ্ধতায় প্রায় ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। বুধবার (২১ আগস্ট) থেকে শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া আমাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৮৯টি সাইক্লোন শেল্টারগুলোও প্রস্তুত রয়েছে।
জলবদ্ধতা নিরসন নিয়ে ডিসি বলেন, লক্ষ্মীপুরের খালগুলোতে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। এতে পানি নামতে পারছে না। জনগণ আমাদেরকে এ ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করছে। প্রশাসনের উপস্থিতি ও জনগণের সহযোগীতায় অবৈধ বাঁধগুলো কেটে দেয়া হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষের সহায়তায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, নদীতে ভাটা আসায় জলাবদ্ধতা নিরসনে সবগুলো স্লুইস গেইট খুলে দেয়া হয়েছে। জোয়ারের সময় গেইটগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। সার্বক্ষণিক আমাদের কর্মীরা পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor